শিক্ষা ও সমাজে লেখ্যাগারের ভূমিকা | 5 Role of Archives in Society and Education

লেখ্যাগার হল মানব সংস্কৃতির ঐতিহাসিক রত্নভাণ্ডার এবং ইতিহাসের জীবন্ত দলিল। তাই শিক্ষা ও সমাজে লেখ্যাগারের ভূমিকা (Role of Archives in Society and Education) বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

লেখ্যাগার হল ঐতিহাসিক নথি সমগ্র সংরক্ষণ রাখার স্থান। তাই লেখ্যাগারে যেসব প্রাথমিক নথি থাকে তার দ্বারা কোনো ব্যক্তি বা সংস্থার সারা জীবনের কর্মমূলক বা সামাজিক ইতিহাস জানা সম্ভব হয়। তবে শুধুমাত্র ইতিহাস বিষয়ে নয়, সমাজের বিভিন্ন বিষয় এই লেখ্যাগারে সঞ্চিত নথির মাধ্যমে জানা সম্ভবপর হয়। তাই শিক্ষা ও সমাজ ব্যবস্থায় লেখ্যাগারের ভূমিকা বিভিন্ন দিক থেকে পরিলক্ষিত হয়।

শিক্ষা ও সমাজে লেখ্যাগারের ভূমিকা | Role of Archives in Society and Education

সংগ্রহশালার মত আর্কাইভ বা লেখ্যাগার বা মহাফেজখানা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রচলিত সংস্থা। এটি শিক্ষা ও সমাজে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অর্থাৎ আর্কাইভ লেখ্যাগার শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী থেকে সাধারণ মানুষের কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। লেখ্যাগারের মাধ্যমে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নথি সঞ্চিত থাকে। শিক্ষা ও সমাজে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে থাকে। তাই শিক্ষা ও সমাজে লেখ্যাগারের ভূমিকা , যে সমস্ত দিক থেকে পরিলক্ষিত হয়, সেগুলি হল –

1. নথি বা পান্ডলিপি সংরক্ষণ ও সঞ্চালন

যেকোনো দেশের লেখ্যাগারে সেই দেশের যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ নথি, সরকারি সম্পত্তি, সরকারি নথি, ঐতিহাসিক দলিল প্রভৃতি সুরক্ষিতভাবে সংরক্ষণ থাকে। কারণ এটি ভবিষ্যতে প্রয়োজনে ব্যবহার করা যায়। তাই লেখ্যাগার দেশের বিপুল পরিমাণ গুরুত্বপূর্ণ নথি বা পান্ডুলিপি সুরক্ষিতভাবে সংরক্ষণের মাধ্যমে প্রাচীনকালের বা অতীতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা, আর্থসামাজিক অবস্থা ও সাংস্কৃতিক পরিচয় তুলে ধরে। যা শিক্ষা ও সমাজের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

2. তথ্যের সামগ্রিক ভান্ডার

লেখ্যাগার হল তথ্যের বা নথির সামগ্রিক ভান্ডার। এখানে বিভিন্ন তথ্য বা নথি সঞ্চিত থাকে। অর্থাৎ লেখ্যাগারে সঞ্চিত তথ্য ভান্ডার সমাজের সামগ্রিক অবস্থাকে তুলে ধরে। এখানে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বা ব্যক্তিগত গুরুত্বপূর্ণ নথি সঞ্চিত থাকে যা সামাজিক বিভিন্ন বিষয়ে তুলে ধরে। তাই লেখ্যাগার কোনো সমাজের সামগ্রিক চিত্র বা অতীত সমাজ জীবন কেমন ছিল, শিক্ষা কেমন ছিল, সংস্কৃতি কেমন ছিল তা যুগ যুগ ধরে সঞ্চিত রাখে। ফলে ভবিষ্যতে এই সমস্ত তথ্য সেই সমাজের লোকজন জানতে পারে ও সমৃদ্ধ হয়। সুতরাং শিক্ষা ও সমাজে লেখ্যাগারের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

3. সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যতা প্রদর্শন

লেখ্যাগার সমাজের বিভিন্ন গোষ্ঠীর বা জাতির সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যতা প্রদর্শন করে থাকে। অর্থাৎ লেখ্যাগারে সঞ্চিত নথি সামাজিক বিভিন্ন সংস্কৃতিকে তুলে ধরে। তাই মানুষের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ভাবনা, জীবন যাপন রীতিনীতি প্রভৃতি লিপিবদ্ধ করে রাখত। প্রাচীনকালে বিভিন্ন গুহা লিপি, অজান্তা গুহাচিত্র প্রভৃতি এই লেখ্যাগারের নিদর্শন। তাই আমাদের পূর্বপুরুষদের সাংস্কৃতিক বৈচিত্রতা বা প্রতিচ্ছবি কেমন ছিল তা লেখ্যাগারের মাধ্যমে জানা সম্ভব হয়। সুতরাং শিক্ষা ও সমাজে লেখ্যাগারের বিশেষ ভূমিকা পরিলক্ষিত হয়।

4. ঐতিহাসিক ও সামাজিক চর্চা

লেখ্যাগারের মাধ্যমে ঐতিহাসিক ও সামাজিক চর্চা করা সম্ভবপর হয়। যা শিক্ষা ও সমাজে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে। অর্থাৎ ইতিহাস, প্রত্নতত্ত্ব, সমাজবিজ্ঞান, নৃতত্ত্ব প্রভৃতি দিকে লেখ্যাগারের ভূমিকা পরিলক্ষিত হয়। তাই ইতিহাস ও সামাজিক বিভিন্ন দিকের চর্চা করার ক্ষেত্রে লেখ্যাগারের সঞ্চিত নথি শিক্ষার্থী ও সমাজের ক্ষেত্রে বিশেষ করে।

5. গবেষণার বিকাশ

লেখ্যাগারের মধ্যে সঞ্চিত গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক দলিল ও নথি সমূহ নিয়ে শিক্ষক ও গবেষক ছাত্রছাত্রীরা বিভিন্ন গবেষণা করে থাকেন। অর্থাৎ লেখ্যাগারে সঞ্চিত ও সংরক্ষিত নথি বা পান্ডুলিপি হল ইতিহাসের জীবন্ত দলিল। যেগুলিকে পাথেয় করে বহু নব শিক্ষার্থী ও গবেষকগণ নিজেদেরকে গবেষণার কাজে নিয়োজিত করেন। এর ফলে মানব সমাজ, ইতিহাস, সাহিত্য এবং সংস্কৃতির ক্ষেত্রে নতুন নতুন দিকের উন্মোচন ঘটে।

উপসংহার

পরিশেষে বলা যায়, লেখ্যাগারের মধ্যে সঞ্চিত নথি হল মানবজাতির ইতিহাসের জীবন্ত দলিল। যার মাধ্যমে অতীতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানা যায় ও মানব কল্যাণে কাজে লাগানো যায়। তাই শিক্ষা ও সমাজে লেখ্যাগারের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

তথ্যসূত্র (Sources)

  • Allaby, R. G. (2016) “Evolution .“Encyclopedia of Evolutionary Biology”. Ed. Kliman, Richard M. Oxford: Academic Press,19–24.
  • Boyd, Brian. (2017) “Archaeology and Human-Animal Relations: Thinking through Anthropocentrism.” Annual Review of Anthropology 46.1, 299–316. Print.
  • Online Sources

প্রশ্ন – শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিকাশে লেখ্যাগারের গুরুত্ব

উত্তর – শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিকাশে লেখ্যাগারের গুরুত্ব বর্তমান। লেখ্যাগার হল ইতিহাসের জীবন্ত দলিল। এটির মাধ্যমে অতীতের বিভিন্ন বিষয়, নথি ও পান্ডুলিপি যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা যায়। যা বর্তমান ও ভবিষ্যতে শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিকাশে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

আরোও পোস্ট পড়ুন

Leave a Comment

close