শিক্ষক দিবস উপলক্ষে বক্তব্য | শিক্ষক দিবস রচনা | Teacher’s Day Speech

শিক্ষক হলেন সমগ্র দেশের তথা জাতির মেরুদন্ড। একমাত্র শিক্ষকগণই তাদের জ্ঞানের আলো দিয়ে মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে আসে। তাই প্রতিবছর ছাত্রছাত্রীদের কাছে শিক্ষক দিবস (Teacher’s Day) একটি গুরুত্বপূর্ণ ও স্মরণীয় দিন হয়ে থাকে।

শিক্ষক দিবস উপলক্ষে বক্তব্য | Teacher’s Day Speech

আজ 5ই সেপ্টেম্বর, শিক্ষক দিবসের প্রাক্কালে মঞ্চে উপবিষ্ট আমার সমস্ত শ্রদ্ধেয় শিক্ষকগণ ও সম্মানীয় অতিথি বৃন্দদেরকে আমার আন্তরিক ও শ্রদ্ধাপূর্ণ প্রণাম জানিয়ে আমি শিক্ষক দিবস (Teacher’s Day) উপলক্ষে কিছু কথা উপস্থাপন করছি।

ভারতবর্ষে প্রতি বছর ৫ ই সেপ্টেম্বর অর্থাৎ আজকের দিনে অত্যন্ত গর্বের ও আনন্দের সঙ্গে শিক্ষক দিবস পালন করা হয়ে থাকে। একটি শিশু জন্ম গ্রহণের পরবর্তী সময় থেকে এবং আমৃত্যু পর্যন্ত যে শিক্ষা অর্জন করে তা শিক্ষক ব্যতীত সম্ভবপর হয় না। তাছাড়া একজন আদর্শ মা হল শিশুর প্রাথমিক শিক্ষক।

তারপর শিশু যখন ধীরে ধীরে প্রথাগত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করে, তখন মানুষরূপী ভগবান স্বরূপ শিক্ষকগণ শিশু শিক্ষার যাবতীয় দায়ভার গ্রহণ করে এবং শিশুকে সমাজের আদর্শ অনুযায়ী শিক্ষা প্রদান করার মধ্য দিয়ে তাকে উপযুক্ত মানুষ করে গড়ে তোলে।

শিক্ষক মহাশয় কেবলমাত্র পাঠ্য বিষয়ের জ্ঞান দান করেন না; বরং তাঁরা আমাদের জীবনের মূল বুনিয়াদ তৈরি করে থাকেন। তাই শিক্ষক হলেন আমাদের তথা শিক্ষার্থীদের বন্ধু, দার্শনিক এবং পথপ্রদর্শক (Friends, Philosopher and Guider), যিনি তাঁর সর্বশক্তি দিয়ে আমাদেরকে অন্ধকার কূপ থেকে আলোর পথে নিয়ে আসেন।

তাই আপনার প্রতিটি পরামর্শ, প্রতিটি শেখানো মূহূর্ত এবং জীবনদর্শন আমাদেরকে অনিশ্চিত জীবনকে একটি মূল্যবান সম্পদে পরিণত করে।

শিক্ষক হলেন জাতির মেরুদন্ড তথা সমাজ গঠনের মূল কারিগর। তাই কোনো শব্দবন্ধ দিয়ে শিক্ষকগণের ভূমিকা, দায়িত্ব ও কর্তব্যকে ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। শিক্ষকগণ সর্বদা একটি সহজ সরল শিশুকে সমাজ উপযোগী করে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে যে ভূমিকা পালন করে তার ঋণ কখনো শোধ করার নয়।

তাই শিক্ষকদের চরণে শতকোটি প্রণাম জানিয়ে খুবই বলতে ইচ্ছে করে –

গুরু ব্রহ্মা, গুরু বিষ্ণু, গুরু দেব মহেশ্বর
গুরু সাক্ষাৎ পরং ব্রহ্ম
তস্মৈ শ্রী গুরুবে নমঃ”।

শিক্ষক দিবসের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

আমরা জানি যে ভারতবর্ষে আদর্শ শিক্ষক হিসেবে ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ অজস্র শিক্ষার্থীদের মন জয় করে নিয়েছিল। তিনি ছিলেন কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের একজন স্বনামধন্য শিক্ষাবিদ ও আদর্শ শিক্ষক।

ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ যখন স্বাধীন ভারতের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হন, তখন তাঁর গুণমুগ্ধ শিক্ষার্থীরা তাঁর জন্মদিন পালনের ইচ্ছে প্রকাশ করেন। কিন্তু শিক্ষক সর্বদাই আদর্শ হন। তিনি তাঁর জন্মদিন পালনের পরিবর্তে তার শিক্ষার্থীদের সমগ্র শিক্ষক জাতির সম্মান প্রদর্শন করার জন্য শিক্ষক দিবস পালন করতে বলেন।

তাই আমরা সকলেই অবগত যে, আজ ৫ ই সেপ্টেম্বর ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ এর জন্মদিন উপলক্ষে আমাদের জীবনের সকল শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধা, সম্মান ও কৃতজ্ঞতা প্রদর্শন করার জন্য আমরা আজকের দিনে শিক্ষক দিবস (Teacher’s Day) পালনে উদ্বুদ্ধ হয়েছি।

সর্বোপরি, কোনো ভাষা দিয়ে শিক্ষক নামক শব্দটির বিশ্লেষণ করা সম্ভব নয়। যিনি সর্বদা আমাদের তাদের জ্ঞানের সমস্ত আলো দিয়ে আমাদের অন্ধকার জগত থেকে আলোর পথে নিয়ে আসার মূল মন্ত্র নিয়ে আসে তাদের চরণে আবার শত কোটি জানাই।

সবাইকে ধন্যবাদ ও প্রণাম জানিয়ে আমার এই ক্ষুদ্র বক্তব্যটি সমাপ্ত করলাম।

নমস্কার

তথ্যসূত্র (Sources)

  • Aggarwal, J. C., Theory and Principles of Education. 13th Ed. Vikas Publishing House Pvt. Ltd.
  • Nayak, B.K, Text Book of Foundation of Education. Cuttack, Odisha: KitabMhal
  • Ravi, S. Samuel, A Comprehensive Study of Education, Fourth Printing-May 2016, Delhi – 110092, ISBN – 978-81-203-4182-1,
  • Teacher’s Day Speech
  • Internet sources

প্রশ্ন – শিক্ষক দিবস কেন পালন করা হয়

উত্তর – শিক্ষক হলেন আমাদের তথা সমগ্র ছাত্র-ছাত্রীদের বন্ধু, দার্শনিক ও পথপ্রদর্শক। শিক্ষক ছাড়া একজন শিক্ষার্থীদের জীবন সম্পূর্ণরূপে অসম্পূর্ণ ও ব্যর্থ।
তাছাড়া শিক্ষক হলেন জাতির মেরুদন্ড এবং মানুষ গঠনের কারিগর। তাই শিক্ষকদের প্রতি অশেষ আনুগত্য ও সম্মান প্রদর্শনের জন্য প্রতিবছর ৫ ই সেপ্টেম্বর ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ এর ইচ্ছা অনুসারে জন্মদিন উপলক্ষে শিক্ষক দিবস (Teacher’s Day) পালন করা হয়ে থাকে।

Poem for teachers day in bengali

মানুষরূপী ভগবান তুমি
শিক্ষক তুমি আজও শিক্ষক,
তুমি স্বর্গ থেকে এনেছিলে জ্ঞানের মহামন্ত্র।
যা আমাদের হৃদয়কে ছুঁয়ে যায়,
মনকে করে বিচলিত,
আর আমরা হয়ে উঠি আদর্শ স্বরুপ।
তাই চরণে তোমার প্রনম্য শত কোটি বার।

আরোও পোস্ট পড়ুন

Leave a Comment