প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে বিভিন্ন ধরনের প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানের সন্ধান পাওয়া যায়। প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানের গুরুত্ব (Importance of Archaeological Sources in History) বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
প্রাচীন ভারতে প্রত্নতাত্ত্বিকগণ খননকার্যের ফলে বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানের সন্ধান পেয়েছেন। প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে যেগুলি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এই সমস্ত উপাদান থেকে মানুষের জীবনযাত্রা সহ প্রাচীন ভারতের ইতিহাস সম্পর্কে সম্যক ধারণা পাওয়া যায়।
প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানের গুরুত্ব | Importance of Archaeological Sources in History
প্রাচীন ভারতে প্রত্নতাত্ত্বিকগণ খননকার্যের ফলে যে সমস্ত প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানের সন্ধান পেয়েছেন সেগুলি ইতিহাসে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এগুলির মাধ্যমে প্রাচীন ইতিহাস সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানের গুরুত্ব গুলি যে সমস্ত দিক থেকে পরিলক্ষিত হয়, সেগুলি হল নিম্নলিখিত –
প্রাচীন ভারতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানের মধ্যে অন্যতম হল – বোখাজকোয় এবং নকসিরুস্তম শিলালিপি
i) বোখাজকোয় শিলালিপি
বোখাজকোয় শিলালিপি জানতে পারা যায় আর্যদের বিস্তৃত সম্পর্কে।
ii) নকসিরুস্তম শিলালিপি
প্রাচীন ভারতের সঙ্গে ইরানের রাজনৈতিক যোগাযোগ বিষয়ে জানা যায় শিলালিপি নকসিরুস্তম থেকে।
প্রাচীন ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান
প্রাচীন ভারতের রাজনৈতিক ও সংস্কৃতি ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানের গুরুত্ব ছিল উল্লেখযোগ্য।
ভারতের অভ্যন্তরে ও বাইরে খনণকার্য চালিয়ে আবিষ্কৃত হয়েছে বহু প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান, যা ভারত সভ্যতার বহু অজ্ঞাত তথ্য মানব সমাজের সামনে উপস্থাপিত করেছে।
হরপ্পা সভ্যতা ও মহেঞ্জোদার খনন কাজের ফলে জানতে পারা গেছে খ্রীষ্টের জন্মের বহু পূর্বেও ভারতে উন্নত সভ্যতার বিকাশ ঘটেছিল। তাই প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানকে প্রাচীন ভারত ইতিহাসের প্রধান বলে চিহ্নিত করা হয়। এই কারণে অনেক ঐতিহাসিক প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান গুলিকে প্রাচীন ভারত ইতিহাসের প্রধান নোঙর বলে অভিহিত করেন।
প্রাচীন ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান গুলিকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়, সেগুলি হল –
(ক) প্রাচীন লিপি,
(খ) মুদ্রা এবং
(গ) সৌধ ও স্মৃতিস্তম্ভ
1. প্রাচীন লিপি
ঐতিহাসিক ভিন সেন স্মিথ প্রাচীন লিপির গুরুত্ব প্রসঙ্গে বলেছেন – প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানসমূহের মধ্যে লিপি বা লেখাগুলিকে প্রথম স্থান দেওয়া হয়। কারণ তথ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে এদের অবদান অমূল্য।
ভারতে পর্বত গাত্র, প্রস্তর খন্ড, তামার পাত্র বা মন্দিরের গায়ে বিভিন্ন লিপি খোদাই করাতেন প্রাচীন ভারতীয় শাসকেরা। প্রাচীন যুগের সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বহু তথ্য পাওয়া গেছে এইসব লিপি পাঠোদ্ধার করে।
এই সমস্ত লিপিতে প্রাপ্ত সন,তারিখ থেকে বিভিন্ন রাজবংশের সময়কাল ও লিপিগুলির অবস্থান থেকে বিভিন্ন রাজ্যের সীমানা এবং রাজবংশের নাম নাম ও রাজাদের কৃতিত্ব প্রভৃতি বহু তথ্য জানা সম্ভব হয়।
প্রাচীন ভারতে প্রাপ্ত সর্বাধিক প্রাচীন লিপি হল মহেঞ্জোদার লিপি। তবে এই লিপির পাঠোদ্ধার এখনো সম্ভব হয়নি। গবেষকগণ নিরন্তর গবেষণার মাধ্যমে এই লিপির পাঠোদ্ধার করতে সচেষ্ট রয়েছেন। গবেষকদের মতে এই লিপির পাঠোদ্ধার করা গেলে প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে।
উপসংহার
প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানের গুরুত্ব অপসীম। এই সমস্ত উপাদানের মাধ্যমে মানব সভ্যতার ইতিহাসের অজানা অধ্যায়ের নানান দিক উন্মোচিত হয়ে থাকে। অর্থাৎ প্রাচীন মানুষের অতীতের সামাজিক জীবন, রাজনৈতিক জীবন, ধর্মীয় জীবন, জীবনযাত্রার গতি প্রকৃতি, খাদ্যাভ্যাস, বাসস্থান প্রভৃতি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়।
তথ্যসূত্র (Sources)
- Allaby, R. G. (2016) “Evolution .“Encyclopedia of Evolutionary Biology”. Ed. Kliman, Richard M. Oxford: Academic Press,19–24.
- Boyd, Brian. (2017) “Archaeology and Human-Animal Relations: Thinking through Anthropocentrism.” Annual Review of Anthropology 46.1, 299–316. Print.
- Online Sources
প্রশ্ন – প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান কয়টি ও কি কি?
উত্তর – প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান হল তিনটি, যথা – (i) প্রাচীন লিপি, (ii) মুদ্রা এবং (iii) সৌধ ও স্মৃতিস্তম্ভ।
আরোও পোস্ট পড়ুন
- লেখ্যাগারের প্রকারভেদ বা শ্রেণিবিভাগ | 8 Main Types of Archives
- লেখ্যাগারের কার্যাবলী আলোচনা | Function of Archives in History
- লেখ্যাগার বা মহাফেজখানা কাকে বলে | Archives in History
- সংগ্রহশালার গুরুত্ব আলোচনা করো | 10 Importance of Museum
- সংগ্রহশালার প্রদর্শন নীতি আলোচনা করো | 10 Museum Exhibition Policy
- সংগ্রহশালার কার্যাবলী আলোচনা | 8 Main Function of Museum
Describe literary source in ancient Indian history